ঢাকা , শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

নুসরাত ফারিয়ার বিয়ে…

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০
  • ৭৮৭ পঠিত

নায়িকার বিয়ে বলে কথা, নাটকীয়তা তো থাকবেই। তা-ই হলো। বছরখানেক ধরে গুঞ্জন ফিসফাস, ‘নুসরাত ফারিয়া বিয়ে করেছেন!’ কিন্তু কোনো গুঞ্জনই ধোপে টেকে না। অবশেষ ফারিয়া নিজেই জানালেন, আপাতত হয়েছে আংটি-বদল, শিগগিরই বিয়ে। গত ২১ মার্চ ঘরোয়া আয়োজনে বাগদান হয়েছে নুসরাত ফারিয়ার। হবু বরের নাম রনি রিয়াদ রশিদ। একটি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। চলুন বাকিটা জেনে নিই নুসরাত ফারিয়ার মুখ থেকেই। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন

আপনাদের দুজনের পরিচয় কীভাবে?

নুসরাত ফারিয়া: আমার বন্ধুর মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে পরিচয়। সে রনিরও বন্ধু। দিনটি ছিল ২০১৩ সালের ২১ মার্চ। তখন সে অষ্ট্রেলিয়া থেকে সবে দেশে ফিরেছে। আমি তখনো সিনেমায় নাম লেখাইনি। পড়াশোনার পাশাপাশি উপস্থাপনা করতাম। পরিচয়ের পর টুকটাক দেখা হতো, কথা হতো। এভাবেই চলছিল।

প্রেমের শুরু কখন?

ফারিয়া: অনেক দিন পরপর দেখা হলে কথা হতো। কিন্তু আমি বুঝতে পারতাম সে আমাকে পছন্দ করে। তত দিনে সে গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার পদে কর্মরত। এভাবে চলতে চলতে বছরখানেক পর সে আমাকে সরাসরি প্রস্তাব দেয়। আমিও রাজি হয়ে যাই। বলতে পারেন সে আমার জীবনে এ ধরনের প্রথম বয়ফ্রেন্ড। আগে এমন সম্পর্কে কারোর সঙ্গে জড়াইনি আমি। ২০১৪ সালে এসে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। আমাদের সম্পর্ক আজকের অবস্থানে এসেছে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে।

কেমন সেটা?

ফারিয়া: দুজনের দুই ধরনের পেশার কারণে এটি হয়েছে। সে সময় আমি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পড়ার পাশাপাশি উপস্থাপনা করে যাচ্ছিলাম। প্রচুর ব্যস্ত ছিলাম। অন্যদিকে রনির অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। অফিস থেকে বেরিয়েও তার আরও কাজ থাকত। ওদিকে আমার উপস্থাপনার কাজ। এ কারণে দেখা হতো কম। এমন হয়েছে, ১৫ দিনে একবার দেখা হয়েছে। ওই সময় আমার মনে হয়েছে হিসাব করলে এক বছরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা হয়েছে আমাদের।

সম্পর্কের প্রায় সাত বছর পরে এসে আংটিবদল হলো। এত সময় নিলেন কেন?

ফারিয়া: সত্যি কথা কি, আমার যেমন মানুষ পছন্দ, তেমন একজন মানুষ পেয়েছি আমি। সময় যতই লাগুক, আমার একে অপরের ওপর অগাধ বিশ্বাস ছিল। সেই জায়গাটা আমরা তৈরি করতে পেরেছি। তা ছাড়া দুই পরিবারকে এক জায়গায় আনতেও একটু সময় লেগেছে। তবে দুই পরিবার থেকে আমাদের এতটাই সমর্থন, সহযোগিতা দিয়েছে, স্বপ্নেও ভাবিনি।

দুই পরিবার কখন জানতে পারল আপনাদের এই সম্পর্কের কথা? প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

ফারিয়া: ২০১৭ সালে আমাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানতে পারে। প্রথমে দুই পরিবার খানিকটা ধাক্কা খায়। আমার বাবা-মা একটু চিন্তিত ছিলেন আমাদের দুজনের বয়সের পার্থক্য নিয়ে। ওর বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে চিন্তা করেননি, আমাকে নিয়ে চিন্তা করেছেন। এই নিয়ে একটু দ্বিধা ছিল। পরে আমরা ঠিকই মানিয়ে নিয়েছিলাম। আর আমাদের বোঝাপড়া দেখে ২০১৮ সালের পর থেকেই দুই পরিবার থেকে বিয়ের চাপ আসতে থাকে। ২০১৯ সালে আমাদের বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু পরে সেটা আমরাই পিছিয়ে দিই।

ওই সময় বিয়েতে রাজি ছিলেন না কেন?

ফারিয়া: তখন আমি ঢাকা–কলকাতা মিলে প্রচুর ছবিতে কাজ করে যাচ্ছিলাম। ওদের পরিবার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছিল, তাই আর সে সময় ওদিক থেকেও বিয়ের জন্য চাপ আসেনি। আমার হবু স্বামী সব সময় সিনেমায় কাজের ব্যাপারে আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। শুধু তাই-ই না, আমার সিনেমায় ঢোকা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

এখন হুট করেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন…

ফারিয়া: হ্যাঁ, হুট করেই হয়ে গেল। করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ মাস থেকেই বাড়িতে বসা। ওই সময় একদিন বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে গল্প করছিলাম। তখন তাঁরা বলছিলেন, ‘এখন তুমি অবসরেই আছ, আংটিবদলটা করে রাখতে পারো। ঘটনাক্রমে ওর পরিবার থেকেও ওই সময় একই প্রস্তাব আসে। তাই দুই পরিবারের ইচ্ছাতে ২১ মার্চ বাগদান করা হয়।

আংটিবদলের অনুষ্ঠান কোথায় হলো?

ফারিয়া: আমার বাসায়। যেহেতু করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে অনুষ্ঠানটি করা, তাই আয়োজন ছিল ছোট পরিসরে। রনি আর আমার পরিবারের অনেক নিকট আত্মীয়ও অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি।

বিয়ে কবে করবেন?

আমার হাতে একটি বিশেষ কাজ আছে। কাজটি অক্টোবর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর নভেম্বর মাসে বড় আয়োজন করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেছে। এখন নতুন করে ভাবতে হবে। তার আগে আমার হবু বরের পরিবার চায় আমার পড়াশোনাটা শেষ হোক। তাঁরা আমার পড়াশোনার বিষয়ে খুবই আগ্রহী।

বিয়ের পর অভিনয়ে ছেদ পড়বে কি?

ফারিয়া: না না, রনির পরিবার থেকে কোনো সমস্যা নেই। বরং তাঁরা অভিনয় করা নিয়ে আমাকে বেশ উৎসাহ দেন, প্রশংসা করেন। আর আমার হবু বরের সহযোগিতার কথা তো আগেই বলেছি। সত্যি বলতে, আমি অনেক লাকি।

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

নুসরাত ফারিয়ার বিয়ে…

প্রকাশিত : ০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০

নায়িকার বিয়ে বলে কথা, নাটকীয়তা তো থাকবেই। তা-ই হলো। বছরখানেক ধরে গুঞ্জন ফিসফাস, ‘নুসরাত ফারিয়া বিয়ে করেছেন!’ কিন্তু কোনো গুঞ্জনই ধোপে টেকে না। অবশেষ ফারিয়া নিজেই জানালেন, আপাতত হয়েছে আংটি-বদল, শিগগিরই বিয়ে। গত ২১ মার্চ ঘরোয়া আয়োজনে বাগদান হয়েছে নুসরাত ফারিয়ার। হবু বরের নাম রনি রিয়াদ রশিদ। একটি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। চলুন বাকিটা জেনে নিই নুসরাত ফারিয়ার মুখ থেকেই। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন

আপনাদের দুজনের পরিচয় কীভাবে?

নুসরাত ফারিয়া: আমার বন্ধুর মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে পরিচয়। সে রনিরও বন্ধু। দিনটি ছিল ২০১৩ সালের ২১ মার্চ। তখন সে অষ্ট্রেলিয়া থেকে সবে দেশে ফিরেছে। আমি তখনো সিনেমায় নাম লেখাইনি। পড়াশোনার পাশাপাশি উপস্থাপনা করতাম। পরিচয়ের পর টুকটাক দেখা হতো, কথা হতো। এভাবেই চলছিল।

প্রেমের শুরু কখন?

ফারিয়া: অনেক দিন পরপর দেখা হলে কথা হতো। কিন্তু আমি বুঝতে পারতাম সে আমাকে পছন্দ করে। তত দিনে সে গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার পদে কর্মরত। এভাবে চলতে চলতে বছরখানেক পর সে আমাকে সরাসরি প্রস্তাব দেয়। আমিও রাজি হয়ে যাই। বলতে পারেন সে আমার জীবনে এ ধরনের প্রথম বয়ফ্রেন্ড। আগে এমন সম্পর্কে কারোর সঙ্গে জড়াইনি আমি। ২০১৪ সালে এসে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। আমাদের সম্পর্ক আজকের অবস্থানে এসেছে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে।

কেমন সেটা?

ফারিয়া: দুজনের দুই ধরনের পেশার কারণে এটি হয়েছে। সে সময় আমি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পড়ার পাশাপাশি উপস্থাপনা করে যাচ্ছিলাম। প্রচুর ব্যস্ত ছিলাম। অন্যদিকে রনির অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। অফিস থেকে বেরিয়েও তার আরও কাজ থাকত। ওদিকে আমার উপস্থাপনার কাজ। এ কারণে দেখা হতো কম। এমন হয়েছে, ১৫ দিনে একবার দেখা হয়েছে। ওই সময় আমার মনে হয়েছে হিসাব করলে এক বছরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা হয়েছে আমাদের।

সম্পর্কের প্রায় সাত বছর পরে এসে আংটিবদল হলো। এত সময় নিলেন কেন?

ফারিয়া: সত্যি কথা কি, আমার যেমন মানুষ পছন্দ, তেমন একজন মানুষ পেয়েছি আমি। সময় যতই লাগুক, আমার একে অপরের ওপর অগাধ বিশ্বাস ছিল। সেই জায়গাটা আমরা তৈরি করতে পেরেছি। তা ছাড়া দুই পরিবারকে এক জায়গায় আনতেও একটু সময় লেগেছে। তবে দুই পরিবার থেকে আমাদের এতটাই সমর্থন, সহযোগিতা দিয়েছে, স্বপ্নেও ভাবিনি।

দুই পরিবার কখন জানতে পারল আপনাদের এই সম্পর্কের কথা? প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

ফারিয়া: ২০১৭ সালে আমাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানতে পারে। প্রথমে দুই পরিবার খানিকটা ধাক্কা খায়। আমার বাবা-মা একটু চিন্তিত ছিলেন আমাদের দুজনের বয়সের পার্থক্য নিয়ে। ওর বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে চিন্তা করেননি, আমাকে নিয়ে চিন্তা করেছেন। এই নিয়ে একটু দ্বিধা ছিল। পরে আমরা ঠিকই মানিয়ে নিয়েছিলাম। আর আমাদের বোঝাপড়া দেখে ২০১৮ সালের পর থেকেই দুই পরিবার থেকে বিয়ের চাপ আসতে থাকে। ২০১৯ সালে আমাদের বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু পরে সেটা আমরাই পিছিয়ে দিই।

ওই সময় বিয়েতে রাজি ছিলেন না কেন?

ফারিয়া: তখন আমি ঢাকা–কলকাতা মিলে প্রচুর ছবিতে কাজ করে যাচ্ছিলাম। ওদের পরিবার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছিল, তাই আর সে সময় ওদিক থেকেও বিয়ের জন্য চাপ আসেনি। আমার হবু স্বামী সব সময় সিনেমায় কাজের ব্যাপারে আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। শুধু তাই-ই না, আমার সিনেমায় ঢোকা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

এখন হুট করেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন…

ফারিয়া: হ্যাঁ, হুট করেই হয়ে গেল। করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ মাস থেকেই বাড়িতে বসা। ওই সময় একদিন বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে গল্প করছিলাম। তখন তাঁরা বলছিলেন, ‘এখন তুমি অবসরেই আছ, আংটিবদলটা করে রাখতে পারো। ঘটনাক্রমে ওর পরিবার থেকেও ওই সময় একই প্রস্তাব আসে। তাই দুই পরিবারের ইচ্ছাতে ২১ মার্চ বাগদান করা হয়।

আংটিবদলের অনুষ্ঠান কোথায় হলো?

ফারিয়া: আমার বাসায়। যেহেতু করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে অনুষ্ঠানটি করা, তাই আয়োজন ছিল ছোট পরিসরে। রনি আর আমার পরিবারের অনেক নিকট আত্মীয়ও অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি।

বিয়ে কবে করবেন?

আমার হাতে একটি বিশেষ কাজ আছে। কাজটি অক্টোবর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর নভেম্বর মাসে বড় আয়োজন করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেছে। এখন নতুন করে ভাবতে হবে। তার আগে আমার হবু বরের পরিবার চায় আমার পড়াশোনাটা শেষ হোক। তাঁরা আমার পড়াশোনার বিষয়ে খুবই আগ্রহী।

বিয়ের পর অভিনয়ে ছেদ পড়বে কি?

ফারিয়া: না না, রনির পরিবার থেকে কোনো সমস্যা নেই। বরং তাঁরা অভিনয় করা নিয়ে আমাকে বেশ উৎসাহ দেন, প্রশংসা করেন। আর আমার হবু বরের সহযোগিতার কথা তো আগেই বলেছি। সত্যি বলতে, আমি অনেক লাকি।