ঢাকা , শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বগুড়ার সোয়া লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
  • ৮২৮ পঠিত

বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা এবং বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সারিয়াকান্দির দেবডাঙ্গা ফিসপাস এলাকায় দুটি নদীর মাঝে দূরত্ব প্রায় ২০০ মিটার। তৃতীয় দফা বন্যায় তিন উপজেলায় সোয়া লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সাহায্য অপ্রতুল হওয়ায় বন্যাদুর্গতরা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনাতলায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৩২ গ্রামের পাঁচ হাজার ৬৩৮ পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার কারণে লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দুর্গত এলাকাগুলোতে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

তেকানীচুকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শামছুল হক জানান, তার ইউনিয়নের সরলিয়া, মহনপুর, চুকাইনগর, খাবুলিয়া, জন্তিয়ারপাড়া, ভিকনেরপাড়া, মহব্বতেরপাড়া এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

অপরদিকে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ৯টি চরের ৭ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত জানান, তার ইউনিয়নের মির্জাপুর, রাধাকান্তপুর, বালুয়াপাড়া, পূর্বসুজাইতপুর ও খাটিয়ামারী গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ইতিমধ্যেই বানভাসীদের মধ্যে শুকনো খাবার, চাল, আলু, মুড়ি, ডাল, লবণ, মোমবাতি, দিয়াশলাই, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলায় দুটি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলার দেবডাঙ্গা ফিসপাস এলাকায় যমুনা ও বাঙালি নদীর দূরত্ব ২০০ মিটার। সারিয়াকান্দি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ থেকে ৪নং ওয়ার্ডে বাঙালি নদীর এবং অন্যগুলোতে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই সব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

জনগণ বাঁশ বেঁধে উপজেলা সদরে আসছেন। সদর ইউনিয়নের চর বাটিয়া গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ পরিবার বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তবে কেউ কেউ এখনও সেখানে নৌকার উপর বসবাস করছেন। সাহেদা ও জহুরুল প্রামাণিক দম্পতি এবং মামুন মিয়া পরিবার নিয়ে নৌকায় বসবাস করছেন। এছাড়া নদীতে স্রোতের কারণে সারিয়াকান্দির হাটশেরপুর ইউনিয়নের বরুরবাড়ি, নারচীর গাছবাড়ি, উত্তর গণভকপাড়া, গোদাগাড়ি, সদর ইউনিয়নের পাইকাপাড়া, চর গোসাইবাড়ি, কুতুবপুর ইউনিয়নের মাছিরপাড়া, ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের বাঁশহাটা গ্রামে বাঙালি নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই সব গ্রামে মাঠের পর মাঠ ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মণ্ডল জানান, তিন দফা বন্যায় বগুড়ার তিন উপজেলায় ১৬২ গ্রামের ৩২ হাজার ৩৬ পরিবারের এক লাখ ২৮ হাজার ৭১৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির। এখন পর্যন্ত দুর্গতদের মাঝে জিআর ৮ লাখ টাকা, তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গবাদিপশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও টাকা আছে। তাই বন্যা দুর্গতদের কোনো চিন্তার কারণ নেই।

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

বগুড়ার সোয়া লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত : ০৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০

বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা এবং বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সারিয়াকান্দির দেবডাঙ্গা ফিসপাস এলাকায় দুটি নদীর মাঝে দূরত্ব প্রায় ২০০ মিটার। তৃতীয় দফা বন্যায় তিন উপজেলায় সোয়া লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সাহায্য অপ্রতুল হওয়ায় বন্যাদুর্গতরা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনাতলায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৩২ গ্রামের পাঁচ হাজার ৬৩৮ পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার কারণে লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দুর্গত এলাকাগুলোতে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

তেকানীচুকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শামছুল হক জানান, তার ইউনিয়নের সরলিয়া, মহনপুর, চুকাইনগর, খাবুলিয়া, জন্তিয়ারপাড়া, ভিকনেরপাড়া, মহব্বতেরপাড়া এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

অপরদিকে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ৯টি চরের ৭ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত জানান, তার ইউনিয়নের মির্জাপুর, রাধাকান্তপুর, বালুয়াপাড়া, পূর্বসুজাইতপুর ও খাটিয়ামারী গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ইতিমধ্যেই বানভাসীদের মধ্যে শুকনো খাবার, চাল, আলু, মুড়ি, ডাল, লবণ, মোমবাতি, দিয়াশলাই, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলায় দুটি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলার দেবডাঙ্গা ফিসপাস এলাকায় যমুনা ও বাঙালি নদীর দূরত্ব ২০০ মিটার। সারিয়াকান্দি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ থেকে ৪নং ওয়ার্ডে বাঙালি নদীর এবং অন্যগুলোতে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই সব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

জনগণ বাঁশ বেঁধে উপজেলা সদরে আসছেন। সদর ইউনিয়নের চর বাটিয়া গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ পরিবার বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তবে কেউ কেউ এখনও সেখানে নৌকার উপর বসবাস করছেন। সাহেদা ও জহুরুল প্রামাণিক দম্পতি এবং মামুন মিয়া পরিবার নিয়ে নৌকায় বসবাস করছেন। এছাড়া নদীতে স্রোতের কারণে সারিয়াকান্দির হাটশেরপুর ইউনিয়নের বরুরবাড়ি, নারচীর গাছবাড়ি, উত্তর গণভকপাড়া, গোদাগাড়ি, সদর ইউনিয়নের পাইকাপাড়া, চর গোসাইবাড়ি, কুতুবপুর ইউনিয়নের মাছিরপাড়া, ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের বাঁশহাটা গ্রামে বাঙালি নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই সব গ্রামে মাঠের পর মাঠ ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মণ্ডল জানান, তিন দফা বন্যায় বগুড়ার তিন উপজেলায় ১৬২ গ্রামের ৩২ হাজার ৩৬ পরিবারের এক লাখ ২৮ হাজার ৭১৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির। এখন পর্যন্ত দুর্গতদের মাঝে জিআর ৮ লাখ টাকা, তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গবাদিপশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও টাকা আছে। তাই বন্যা দুর্গতদের কোনো চিন্তার কারণ নেই।