ঢাকা , সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

যে বাড়িতে শেষবার নিশ্বাস নিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১০:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০
  • ৭০৮ পঠিত

যে বাড়িতে ফেরার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে এন্ড্রু কিশোর বাংলাদেশে ছুটে এসেছিলেন। তিনি এখন সেই বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট কক্ষে শুয়ে আছেন। কক্ষটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। নাম হিমঘর। তাঁর দুই সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন। তাঁরা ফিরলে হিমঘর থেকে বের করা হবে, কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে আর নেওয়া হবে না। যদিও বাড়িটা তাঁর নয়। কিন্তু এখন থেকে এ বাড়িই তাঁর ‘পরিচয়’ বহন করবে, স্মৃতি বহন করবে। বাড়িটা তাঁর বোনের।

এই শহরেই এন্ড্রু কিশোর জন্ম নিয়েছিলেন। বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়াও এখানেই। তাঁর হৃদয়জুড়ে ছিল এই শহর। তবে নিজের কোনো বাড়ি নেই। পদ্মা আবাসিক এলাকায় বোনের সঙ্গে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। সেটাও চিকিৎসার জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন। রাজশাহীকে ছুঁয়ে দেখার জন্য এসেছিলেন তিনি। উঠেছিলেন বোনের বাড়িতে। এ বাড়িতেই তিনি পৃথিবীর বাতাসে শেষবার নিশ্বাস নিয়েছেন, ছেড়েছেন।

এন্ড্রু কিশোর। ছবি: প্রথম আলোরাজশাহী নগরের মহিষবাথান এলাকায় অবস্থিত এ বাড়ির নিচতলায় এন্ড্রু কিশোরের বোন শিখা বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের একটি চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে। আর ওপরের তলাগুলো আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গত ২০ জুন এন্ড্রু কিশোর ঢাকা থেকে এই বাসায় এসে ওঠেন। গণমাধ্যমে খবর সূত্রে রাজশাহীর মানুষ জানতেন, এই বাড়িতে প্লেব্যাক–সম্রাট এন্ড্রু কিশোর আছেন। কিন্তু করোনা–পরিস্থিতির কারণে শুভানুধ্যায়ীরা বাসায় তাঁকে দেখতে যেতে পারেননি। এ ব্যাপারে বাড়িতে কড়াকড়ি ছিল।

গত সোমবার সন্ধ্যার সময় বাড়িটার সামনে ভিড় জমে ওঠে। কেউ কাউকে ঠেকাতে চেষ্টা করেননি। কেউ বাধাও মানেননি। সবাই চেয়েছেন শেষবারের মতো সংগীতের বরপুত্রকে তাঁরা দেখতে চান। গোসল শেষে রাতেই এন্ড্রু কিশোরকে হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সবাই একে একে সরে এলেন বাড়িটা থেকে। তবে এন্ড্রু কিশোর বাড়িটাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলেন। এখন রাজশাহী শহরের চেনা কোনো মানুষ এই বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একবার চেয়ে দেখবেন—প্লেব্যাক–সম্রাট এই বাড়িতে আসতেন, থাকতেন এবং শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

যে বাড়িতে শেষবার নিশ্বাস নিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর

প্রকাশিত : ১০:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০

যে বাড়িতে ফেরার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে এন্ড্রু কিশোর বাংলাদেশে ছুটে এসেছিলেন। তিনি এখন সেই বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট কক্ষে শুয়ে আছেন। কক্ষটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। নাম হিমঘর। তাঁর দুই সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন। তাঁরা ফিরলে হিমঘর থেকে বের করা হবে, কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে আর নেওয়া হবে না। যদিও বাড়িটা তাঁর নয়। কিন্তু এখন থেকে এ বাড়িই তাঁর ‘পরিচয়’ বহন করবে, স্মৃতি বহন করবে। বাড়িটা তাঁর বোনের।

এই শহরেই এন্ড্রু কিশোর জন্ম নিয়েছিলেন। বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়াও এখানেই। তাঁর হৃদয়জুড়ে ছিল এই শহর। তবে নিজের কোনো বাড়ি নেই। পদ্মা আবাসিক এলাকায় বোনের সঙ্গে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। সেটাও চিকিৎসার জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন। রাজশাহীকে ছুঁয়ে দেখার জন্য এসেছিলেন তিনি। উঠেছিলেন বোনের বাড়িতে। এ বাড়িতেই তিনি পৃথিবীর বাতাসে শেষবার নিশ্বাস নিয়েছেন, ছেড়েছেন।

এন্ড্রু কিশোর। ছবি: প্রথম আলোরাজশাহী নগরের মহিষবাথান এলাকায় অবস্থিত এ বাড়ির নিচতলায় এন্ড্রু কিশোরের বোন শিখা বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের একটি চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে। আর ওপরের তলাগুলো আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গত ২০ জুন এন্ড্রু কিশোর ঢাকা থেকে এই বাসায় এসে ওঠেন। গণমাধ্যমে খবর সূত্রে রাজশাহীর মানুষ জানতেন, এই বাড়িতে প্লেব্যাক–সম্রাট এন্ড্রু কিশোর আছেন। কিন্তু করোনা–পরিস্থিতির কারণে শুভানুধ্যায়ীরা বাসায় তাঁকে দেখতে যেতে পারেননি। এ ব্যাপারে বাড়িতে কড়াকড়ি ছিল।

গত সোমবার সন্ধ্যার সময় বাড়িটার সামনে ভিড় জমে ওঠে। কেউ কাউকে ঠেকাতে চেষ্টা করেননি। কেউ বাধাও মানেননি। সবাই চেয়েছেন শেষবারের মতো সংগীতের বরপুত্রকে তাঁরা দেখতে চান। গোসল শেষে রাতেই এন্ড্রু কিশোরকে হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সবাই একে একে সরে এলেন বাড়িটা থেকে। তবে এন্ড্রু কিশোর বাড়িটাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলেন। এখন রাজশাহী শহরের চেনা কোনো মানুষ এই বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একবার চেয়ে দেখবেন—প্লেব্যাক–সম্রাট এই বাড়িতে আসতেন, থাকতেন এবং শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।