দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা আরশাদ মাদানী বলেছেন তাবলীগের দুই পক্ষই আমাদের, উভয়ই হক। কারো সাথে সম্পর্ক খারপ করবো না। আমরা কারো বিরোধিতা করবো না। আজ ৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২৪ রোজ মঙ্গলবার বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের খতমে বুখারী অনুষ্ঠানে আমীরুল হিন্দ দেওবন্দের মাওলানা আরশাদ মাদানী এই বক্তব্য রাখেন।
মাওলানা আরশাদ মাদানী আরো বলেন, “যদি কোন ব্যাক্তি কাউকে গোমরাহ বলে, লানত দেয়, তাহলে আল্লাহর নবী বলেন, ঐ ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে গোমরাহ না হলে কিংবা লা’নতের উপযুক্ত না হলে লা’নতদাতার উপরেই তা পতিত হয়। তিনি আরো বলেন, দেওবন্দে প্রায় ফতোয়া চাওয়া হয়, তাবলীগের দুপক্ষের মধ্যে কারা গোমরাহ, কারা কাফের? আমরা বলে দেই, কেউ কাফের না এমনকি গোমরাও না। সবাই নামাজী, মুমিন, গুনাহ থেকে পরহেজগার। অতএব, কেউ কাউকে কাফের বা ফাসেক বলে নিজের ঈমান ও আখেরাতকে বরবাদ করো না। যারা এতদিন এসব করেছো তারা তওবা করো। উভয়পক্ষের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাবলীগের দুই পক্ষই আমাদের কাছে আসে, কথা বলে, আমরা শুনি। আমাদের দাওয়াত করে, আমরা যাই, তাদেরও আমরা দাওয়াত করি। আমাদের মধ্যে কোন ইখতেলাফ নেই।
মাওলানা মাদানী আরো বলেন, দুই পক্ষ একই মেহনত করে। উভয়ের জামাতই আল্লাহর রাস্তায় বের হয়। তাই আমরা বলি, কোন একপক্ষকে মহব্বত করার কারণে অপরপক্ষকে কাফের বলা, গোমরা বলা ভয়াবহ গুনাহ। তারা কাফের হবে না বরং তোমার ঈমানই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দারুল উলুম দেওবন্দের কাছে ফতোয়া চাওয়া হয়েছে। আমরা ফতোয়া দিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি যখন রুজু করে নিয়েছেন তখন সব মাসআলা খতম হয়ে গিয়েছে। কেউ দুনিয়াবী স্বার্থে আখেরাতকে বরবাদ না করি। তাই অত্যন্ত আফসোসের সাথে এই পয়গাম দিতে চাই, তাবলীগের বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে একপক্ষকে কাফের বলা, খুন-খারাবী করা ধ্বংস ছাড়া আর কোন পরিণতি বয়ে আনবে না।
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, দুই পক্ষই হক। আবারো বলছি, উভয়পক্ষই সঠিক। এমন ইখতেলাফ দারুল উলূম দেওবন্দেও হয়েছে। ফলে আরেকটি দেওবন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এমনভাবে অনেক মাদরাসায় মতবিরোধের কারণে নতুন নতুন মাদরাসা সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় একটিকে সঠিক ধরে নিয়ে বাকীগুলোকে বিভ্রান্ত ও গোমরাহ বলা নিছক মূর্খতা ছাড়া আর কিছু না। উক্ত বক্তব্য রাখার সময় সহস্রাধিক উলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
কৃতজ্ঞতা: সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ
ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=7ChXp_8YHrM