ঢাকা , শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

হাসপাতালের দিনগুলো দ্রত ভুলে যেতে চান সেলিম চৌধুরী

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • ৭৬৪ পঠিত

চোখের সামনে জলজ্যান্ত মানুষকে নিষ্প্রাণ, নিথর হয়ে যেতে দেখেছেন। তারপরও নিজেকে ধরে রাখতে হয়েছে। ভেঙে পড়েননি এতটুকু। মনোবল ধরে রেখে কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী এখন সুস্থ। হাসপাতালের বিভীষিকাময় কোভিড-১৯ ইউনিট থেকে এখন তিনি নিজের গ্রামের বাড়ি মৌলবীবাজারে। ৬ জুলাই করোনাক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের নর্থইস্ট হাসপাতালে। গত বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলেছে তাঁর। আজ পেয়েছেন কোভিড–১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট।

প্রথম আলোকে সেলিম চৌধুরী জানান, ১৫ জুলাই রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। এখন বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘ডাক্তার বলেছেন, বাইরের পৃথিবী নিয়ে না ভাবতে। চিন্তামুক্ত থেকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন।’ সাদা বিছানা ছাড়লেও মানসিক অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি তাঁর। করোনার প্রভাব রয়ে গেছে মনে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটাই এখন চ্যালেঞ্জ।

সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘করোনা কিছু লক্ষণ রেখে গেছে মাথায়। আমি ঠান্ডা মাথার মানুষ। অথচ হুটহাট খুব রাগ হয়ে যাচ্ছে আমার। করোনার আগে কখনো এমন হয়নি। আসলে রোগ শরীর ছেড়ে গেলেও মনের মধ্যে প্রভাব রেখে গেছে। একটা যুদ্ধ শেষে বেরিয়ে এসেছি। যুদ্ধের রেশটা যেন রয়ে গেছে। মনে একধরনের অশান্তি রয়েছে। বুঝতেই পারেন, শরীরে-মনে অনেক বড় ধকল গেছে।’

বাড়িতে ফিরে কীভাবে সময় কাটছে তাঁর? সেলিম চৌধুরী জানান, তিনি সুরের মানুষ। গান শুনছেন। গানের চর্চা করছেন। বাড়ির দেখাশোনা করছেন। কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে বলেছেন ডাক্তার। তাঁর কথা মেনে চলছেন। কথায় কথায় সেলিম চৌধুরী জানান, তাঁর অসুস্থতার সময়ে সংগীতের মানুষেরা খোঁজখবর নিয়েছেন। অনেক সময় কথা বলতে পারেননি, তাঁর স্বজনদের কাছে প্রিয় শিল্পীর ব্যাপারে খবরাখবর নিয়েছেন।

সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘অসুস্থ না হলে বুঝতে পারতাম না, এত মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। বিশেষত গানের জগতের মানুষেরা প্রতিদিন আমার কুশল জানতে চেয়েছেন। আমি সবার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সবাইকে।’ সবার কাছে দোয়া চেয়ে সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘খারাপ যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারত। কত মানুষ চলে যাচ্ছেন। আমি ফিরে এলাম। এ জন্য ওপরওয়ালার কাছে বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি অবসরে।’

শিল্পী জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাঁকে একটি করোনামুক্ত হওয়ার সনদ দিয়েছেন আজ শনিবার।

উল্লেখ্য, সেলিম চৌধুরী লকডাউনের আগে ঢাকা থেকে তাঁর গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে চলে আসেন। জুনের শেষ দিকে জ্বরে পড়েন। পরে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। ৬ জুলাই সিলেট শহরের নর্থস্টার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই ১০ দিন চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

হাসপাতালের দিনগুলো দ্রত ভুলে যেতে চান সেলিম চৌধুরী

প্রকাশিত : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

চোখের সামনে জলজ্যান্ত মানুষকে নিষ্প্রাণ, নিথর হয়ে যেতে দেখেছেন। তারপরও নিজেকে ধরে রাখতে হয়েছে। ভেঙে পড়েননি এতটুকু। মনোবল ধরে রেখে কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী এখন সুস্থ। হাসপাতালের বিভীষিকাময় কোভিড-১৯ ইউনিট থেকে এখন তিনি নিজের গ্রামের বাড়ি মৌলবীবাজারে। ৬ জুলাই করোনাক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের নর্থইস্ট হাসপাতালে। গত বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলেছে তাঁর। আজ পেয়েছেন কোভিড–১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট।

প্রথম আলোকে সেলিম চৌধুরী জানান, ১৫ জুলাই রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। এখন বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘ডাক্তার বলেছেন, বাইরের পৃথিবী নিয়ে না ভাবতে। চিন্তামুক্ত থেকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন।’ সাদা বিছানা ছাড়লেও মানসিক অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি তাঁর। করোনার প্রভাব রয়ে গেছে মনে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটাই এখন চ্যালেঞ্জ।

সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘করোনা কিছু লক্ষণ রেখে গেছে মাথায়। আমি ঠান্ডা মাথার মানুষ। অথচ হুটহাট খুব রাগ হয়ে যাচ্ছে আমার। করোনার আগে কখনো এমন হয়নি। আসলে রোগ শরীর ছেড়ে গেলেও মনের মধ্যে প্রভাব রেখে গেছে। একটা যুদ্ধ শেষে বেরিয়ে এসেছি। যুদ্ধের রেশটা যেন রয়ে গেছে। মনে একধরনের অশান্তি রয়েছে। বুঝতেই পারেন, শরীরে-মনে অনেক বড় ধকল গেছে।’

বাড়িতে ফিরে কীভাবে সময় কাটছে তাঁর? সেলিম চৌধুরী জানান, তিনি সুরের মানুষ। গান শুনছেন। গানের চর্চা করছেন। বাড়ির দেখাশোনা করছেন। কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে বলেছেন ডাক্তার। তাঁর কথা মেনে চলছেন। কথায় কথায় সেলিম চৌধুরী জানান, তাঁর অসুস্থতার সময়ে সংগীতের মানুষেরা খোঁজখবর নিয়েছেন। অনেক সময় কথা বলতে পারেননি, তাঁর স্বজনদের কাছে প্রিয় শিল্পীর ব্যাপারে খবরাখবর নিয়েছেন।

সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘অসুস্থ না হলে বুঝতে পারতাম না, এত মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। বিশেষত গানের জগতের মানুষেরা প্রতিদিন আমার কুশল জানতে চেয়েছেন। আমি সবার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সবাইকে।’ সবার কাছে দোয়া চেয়ে সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘খারাপ যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারত। কত মানুষ চলে যাচ্ছেন। আমি ফিরে এলাম। এ জন্য ওপরওয়ালার কাছে বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি অবসরে।’

শিল্পী জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাঁকে একটি করোনামুক্ত হওয়ার সনদ দিয়েছেন আজ শনিবার।

উল্লেখ্য, সেলিম চৌধুরী লকডাউনের আগে ঢাকা থেকে তাঁর গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে চলে আসেন। জুনের শেষ দিকে জ্বরে পড়েন। পরে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। ৬ জুলাই সিলেট শহরের নর্থস্টার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই ১০ দিন চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।