আমিও সময়টাকে ধরার চেষ্টা করেছি। নিজেকে চেঞ্জ করেছি বলব না। আমি মনে করি, একজন অভিনেতা নানা রঙে, নানা বর্ণে বহুরূপী হবে। আমাকে কীভাবে ব্যবহার করবেন, সেই দায়িত্ব একজন নির্মাতার কাঁধে চাপে।
বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় সংলাপ বলায় ওস্তাদ অভিনেতা মীর সাব্বির। ঈদুল আজহার নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’দের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন তিনি। দেশের বিনোদন অঙ্গনে যাঁদের অবদান রয়েছে, দেশের এ রকম ব্যক্তিত্বদের একটি তালিকা নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকাশ করেছেন এই অভিনেতা।
এই করোনা পরিস্থিতিতেও শুটিংয়ে ব্যস্ত সাব্বির। করোনার মধ্যে শুটিং করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনার এই সময়ে কাজ করার কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে। সেসব মাথায় রেখেই গল্প, চরিত্র, শুটিং ইউনিট, সবার নিরাপত্তার বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজ করছি। এরই মধ্যে চারটি নাটকের কাজ শেষ করেছি। আরও ছয় থেকে সাতটির মতো ঈদ ধারাবাহিক এবং আটটি একক নাটকের কাজ আছে। কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে বটে, কিন্তু ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।’
ঈদুল ফিতরে ‘স্বপ্নপুরুষ’, ‘লাবু বিএসসি’সহ চারটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন মীর সাব্বির। ঈদের নাটক নিয়ে দর্শকের যেমন আলাদা আগ্রহ থাকে, তেমনি তিনি নিজেও উৎসাহী থাকেন এ সময়ের কাজ নিয়ে। তবে এই করোনায় আগ্রহের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা আশঙ্কা। তিনি বলেন, ‘করোনার এই সময়ে বাসা থেকে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বের হতে হয়। শুটিং সেটে আসা, শুটিং করা এবং বাসায় গিয়েও বাড়তি সচেতনতায় থাকতে হয়। সচেতন থাকলে কিছু ঝুঁকি থেকেই যায়।’ এত ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করতে বের হচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন সেক্টরের মতো আমাদের নাটকের জায়গাটাও ঝুঁকির মুখে পড়বে। এই অঙ্গন বিনিয়োগকারীদের হারাচ্ছে। নির্মাতা, ক্যামেরাম্যান, লাইটম্যানসহ বিভিন্ন কলাকুশলী এর সঙ্গে জড়িত। আমরা যাঁরা প্রধান চরিত্রে অভিনয় করি, তাঁরা যদি ভূমিকা না রাখি, তাহলে অনেকের কর্মসংস্থান হবে না। শুটিংয়ের সঙ্গে জড়িত মানুষেরা পরিবার নিয়ে বেকার হয়ে যাবে। এ জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করছি, ডেট দিচ্ছি। যোদ্ধার মতো সামনের লাইনে থেকে কাজ করছি।’
অভিনয়ের মাধ্যমে দেশের অগণিত মানুষের কাছে আজ ‘মীর সাব্বির’ হয়ে উঠেছেন তিনি। যখন তিনি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, তখনকার ও এই সময়ের নাটকগুলোর মানের কতটা ব্যবধান তিনি নিজে লক্ষ করেছেন? মীর সাব্বির বলেন, ‘বাংলাদেশের নাটক আস্তে আস্তে নিচের দিকে নামছে। বাজেট, গল্প থেকে শুরু করে নাটক আজ যে জায়গায় থাকার সুযোগ ছিল, নানা কারণে নাটক আজ সেখানে নেই। ২০০৭-০৮ সালের পর থেকে গ্রামীণ নাটকের একধরনের ট্রেন্ড চালু হয়েছিল। তখন থেকেই নাটকে ভাষাগত পরিবর্তন আসে। সেই সময় শুদ্ধ ভাষা থেকে অশুদ্ধ ভাষার নাটকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। তখন আমি আঞ্চলিক ভাষায় কিছু নাটক করার চেষ্টা করেছি। সেগুলো দর্শক গ্রহণ করেছে।’
তখন আপনার ভূমিকা কী ছিল? সাব্বির বলেন, ‘তখন আমিও সময়টাকে ধরার চেষ্টা করেছি। নিজেকে চেঞ্জ করেছি বলব না। আমি মনে করি, একজন অভিনেতা নানা রঙে, নানা বর্ণে বহুরূপী হবে। আমাকে কীভাবে ব্যবহার করবেন, সেই দায়িত্ব একজন নির্মাতার কাঁধে চাপে।’