রাজধানীর একটি হোটেলে সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে আজ শুক্রবার এসব কথা উঠে আসে।
‘বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি এবং খাদ্যনিরাপত্তা’ শীর্ষক অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বাংলাদেশের খাদ্যনীতি, ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা, শিশুর অপুষ্টি, দারিদ্র্য, কৃষি উৎপাদনসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) গবেষকেরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে এসব তুলে ধরেন। ইফপ্রির তিনজন গবেষক তিনটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
এই অধিবেশনে ‘খাদ্যব্যবস্থা পরিচালনা: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ বিষয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন ইফপ্রির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড্যানিয়েল রেসনিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০১৭ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য যে অর্থনৈতিক কৌশল ঠিক করে, তাতে ২০১৭ থেকে ২০৩০ মেয়াদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি ডলার বার্ষিক ঘাটতি দেখা যায়। করোনা মহামারি ও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ সেই ঘাটতি আরও বাড়িয়েছে। এখন বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশটি বারবার তাগিদ দিচ্ছে। এর আগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কিছু সদস্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
বাংলাদেশ সরকার ‘ঢাকা ফুড অ্যাজেন্ডা ২০৪১’ ঘোষণা করেছে। এ প্রসঙ্গে ড্যানিয়েল বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় নয়, এই অ্যাজেন্ডা ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এখানেও কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়গুলোতে কে নেতৃত্ব দিচ্ছে, এই অ্যাজেন্ডায় কীভাবে জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থাপনা কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সম্পদ কীভাবে বরাদ্দ করা হবে এবং মফস্সল বা ছোট শহরগুলোতে খাদ্যবৈষম্য নিরসন কীভাবে করা হবে—সেগুলো নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য উল্লেখ করে ইফপ্রির এই গবেষণা ফেলো বলেন, দ্রুত নগরায়ণের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে শহুরে জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৬ শতাংশ হতে পারে। এর অন্যতম কারণ জলবায়ুর প্রভাবে স্থানচ্যুত হওয়া। এই জনগোষ্ঠী অনানুষ্ঠানিক খাতে যুক্ত হয়; যা শহরের খাদ্যব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের ওপরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।
এই অধিবেশনে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা–সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়। চ্যালেঞ্জগুলো হলো জলবায়ু, লিঙ্গ, জাতি, অধিকার, জবাবদিহি, রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা এবং নীতি।