ফ্রেম থেকে একসময় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন বেশ কজন তারকা। অথচ দিনের পর দিন একসঙ্গে দেখা যেত তাঁদের। কী এক অভিমান পরস্পরকে দূরে ঠেলে দিল। একত্রে আর কাজ করাই হলো না তাঁদের। এক দশক পর আবার এক হলো অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক ও লেখকের সেই দল।
সম্প্রতি শুরু হয়েছে ঈদ ধারাবাহিক ‘টাম কাড’-এর শুটিং। এক হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী, শামীম জামান, আ খ ম হাসান, শাহনাজ খুশি ও বৃন্দাবন দাস। এতকাল পর খুশির ঈদ তাঁদের অভিমান ভাঙার উপলক্ষ হয়ে এল।
শামীম জামান বলেন, ‘হাড়কিপ্টা’ নাটকের শুটিংয়ের সময়ই সালাহউদ্দিন লাভলু ও বৃন্দাবন দাসের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়, সেখান থেকে ভুল-বোঝাবুঝি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নাটকের বাজেট তখন কম ছিল। গল্পে ছিল একাধিক বড় তারকা। নাট্যকারকেও দিতে হতো বড় অঙ্কের সম্মানী। এই ব্যয় বহন করা নিয়ে নাট্যকার ও প্রযোজকের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রযোজক, পরিচালক ও লেখককে। ফলাফল এক দশকের বিচ্ছিন্নতা। এমনও হয়েছে, অনেক দিন একসঙ্গে বসে কথাও বলেননি তাঁরা, আড্ডা দেননি।
প্রযোজক ও অভিনেতা থেকে পরে নির্মাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন শামীম জামান। চেষ্টা করেছিলেন সবাইকে এক করতে। নানা কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। তখনকার ঘটনা জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কথা, পাল্টা কথা হতে পারে। তেমনই এক ঘটনা ঘটেছিল। লাভলু ভাই আর দাদার (বৃন্দাবন) মধ্যে লেখালেখি নিয়ে কিছু একটা হয়েছিল। আমি মাঝখানে পড়ে যাই। পরে ডিরেকশনে নিজের একটা জায়গা তৈরির কথা ভেবেছিলাম। যা হোক, সাত মাস আগে সিদ্ধান্ত নিই, মান-অভিমান পুষে রাখলে চলে না। আমাদের এই টিমের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো ছিল। সেটা ফিরিয়ে আনতে দাদার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করি।’
সালাহউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় যেমন আলাদা বৈচিত্র্য, তেমনি গল্পের ঢং বলে দিত, বোঝা যেত এটা বৃন্দাবন দাসের নাটক। গ্রামীণ পটভূমিতে তাঁদের নাটক দর্শকদের অন্য রকম বিনোদন দিত। একটি চমৎকার দল গড়ে উঠেছিল, যারা ‘পত্রমিতালি’, ‘গরুচোর’, ‘ঘরকুটুম’, ‘আলতা সুন্দরী’, ‘সাকিন সারিসুরি’সহ অনেক নাটক করেছে। হঠাৎ সবার জন্য লেখা বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে বৃন্দাবন দাস বলেন, ‘“হাড়কিপ্টা” নাটকে বহু তারকা কাজ করতেন। তাঁদের খরচ, আমার ও লাভলুর সম্মানী নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। নয় বছর পর শামীম আবেগঘন একটা এসএমএস পাঠাল, তখন মনে হলো কাজের জায়গায় আমাদের এক হওয়া দরকার।’
বৃন্দাবন দাস লিখলেন, শামীম জামান করলেন পরিচালনা। দুজনের নাটকে অভিনয় করলেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেখা হতো, কথা হতো, একত্রে কাজ করা হয়নি। অনেক দিন পর একসঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগছে।’ দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ না করাকে দুঃখজনক ঘটনা মনে করেন সালাহউদ্দিন লাভলুও। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু কারণে আমার সেই আগের টিমকে নিয়ে কাজ করা হয়নি। বৃন্দাবন দাদার সঙ্গে কথা বলেছি। বড় কোনো প্রজেক্টে ঈদের পর আগের মতো করে ফিরব।’
বৃন্দাবন দাসের লেখা ‘টাম কাড’ নাটকটি ঈদে এনটিভিতে প্রচার করা হবে।