ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম কমছে ১০ শতাংশ। রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রিন্স মাহমুদের কবিতায় কষ্ট পেয়েছেন ন্যান্‌সি

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ১২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুন ২০২০
  • ৮০৬ পঠিত

গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদের ‘আমি বাঁচলেই হবে’ কবিতাটি দুঃখ দিয়েছে গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্‌সিকে। সম্প্রতি একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে সেটি। সম্প্রতি তাঁর নতুন গান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উঠে আসে করোনাকালে শিল্পীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গ। সে সময় ওই কবিতা প্রসঙ্গেও কথা বলেন এই কণ্ঠশিল্পী।

ন্যান্‌সি বলেন, ‘কিছুদিন আগে প্রিন্স ভাইয়ের “আমি বাঁচলেই হবে” কবিতাটি দেখলাম। তিনি লিখেছেন, একজন শিল্পীর কাজ কি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া, কয়টা লাইক এল সেসব দেখা, লিপস্টিক মাখা, ভিউ গোনা, কানে তুলা দিয়ে নিজে ভালো থাকা …ইত্যাদি ইত্যাদি। এ ধরনের একটি কবিতা দেখে খুবই দুঃখ পেয়েছি। প্রিন্স ভাই নিজে শিল্পী হয়ে অন্য শিল্পীদের দুঃখ যদি না বোঝেন, তাহলে কে বুঝবে? তাঁর এই কবিতায় কষ্ট পেয়েছি।’

কয়েক বছর ধরে সংগীত অঙ্গনের অনেকের আগের মতো কাজ নেই। এ কারণে সংগীতের অনেকেই জড়াচ্ছেন নাটক, বিজ্ঞাপন, সিনেমার গান ও সংগীত পরিচালনায়। কেউ কেউ জীবন ধারণ করতে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে গান ছাড়ছেন, অনেকে অনলাইনে অনুষ্ঠান করছেন। এসবের মধ্যে দিয়ে একজন শিল্পী যদি টিকে থাকার চেষ্টা করেন, তবে ক্ষতি নেই বলে মনে করেন ন্যান্‌সি।

এই সময়ে অনেকেই শিল্পীদের ছোট করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ন্যান্‌সি বলেন, ‘অনেককেই লিখতে দেখছি যে শিল্পীরা দুই–তিন মাস চলতে পারেন না। এটা দুঃখজনক। দেশের কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ীরা দুই–তিন মাস চলতে পারছেন না, তাহলে শিল্পীরা কীভাবে চলবেন? শিল্পীদের কাছে কি গুপ্তধন আছে? প্রকাশ করতে না পারলেও শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই সমস্যায় আছেন।’আক্ষেপ নিয়ে ন্যান্‌সি বলেন, ‘তিনি শিল্পী হয়ে শিল্পীদের ছোট করতে পারেন না, কটাক্ষ করতে পারেন না। এখন কাজ কমে গেছে, প্রাপ্য সম্মানিটুকুও অনেকে পান না। যে কারণে কিছু শিল্পী ইউটিউব চ্যানেলে গান তুলছেন। সে কি চাইবে না সেগুলোর ভিউ হোক, তা থেকে কিছু আয় হোক, সেটা দিয়ে সংসার চলুক, তিনি তো সবই বোঝেন! যদি প্রশ্ন করি, তিনি নিজে কী করেছেন? আমি ন্যান্‌সি সাধ্যমতো অনেক কিছু করেছি। কিন্তু যে শিল্পীরা স্টেজ শো, টিভি লাইভ ও রেকর্ডিংয়ের টাকায় সংসার চালাতেন, তাঁদের অনেকের আয় নেই। তাঁরা নিজের জায়গা থেকে সংগ্রাম করছেন। কার ব্যাংকে কত টাকা আছে, সেটা তাঁরাই জানেন। আর বসে খেলে রাজার সম্পদও ফুরিয়ে যায়। তারপরও কি অনেক শিল্পী তাঁর জায়গা থেকে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করছেন না? অবশ্যই করছেন। তাহলে এভাবে কেন আমরা শিল্পীরাই নিজেদের ছোট করব?’

সম্প্রতি সত্তর দশকের বাংলা ছবির জনপ্রিয় ‘গান হয়ে এলে’ গানটি নতুন করে ধারণ করা হয়েছে। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্‌সি। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে গানটি গেয়েছিলেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসি রহমান। সেটি ব্যবহার করা হয় রাজ্জাক-কবরী অভিনীত ‘নীল আকাশের নিচে’ ছবিতে। গানের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন কবরী।

এ গান প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘এত বড় একজন শিল্পীর গান গাইছি বলে প্রথম থেকেই অনেক ভয়ে ছিলাম। নিজের মৌলিক গান করার সময় অতটা চাপ বোধ করি না। তখন নিজের মতো করে যেভাবে খুশি গাওয়া যায়। কিন্তু ফেরদৌসি আপার মতো গুণী মানুষের গান গাওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের।’রিমেক এ গানের মূল সুর ঠিক থাকলেও ভিন্নতা থাকবে সংগীতায়োজনে। এ প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘আমাকে আগেই বলে নেওয়া হয়েছিল, মূল গানের গায়কী যেন বিকৃত না হয়। সেদিকেই আমার মনোযোগ ছিল বেশি। এখন আপার মতো একই কোয়ালিটি হয়তো হবে না, কিন্তু ওয়ে অব সিংগিং হয়তো আপার মতো একই হতে পারে। সে জন্য চেষ্টা করেছি মূল গানের আবেগটা ঠিক রাখতে।’

ঈদুল আজহাকে উপলক্ষ করে ইতিমধ্যে চারটি গানের রেকর্ডিং সম্পন্ন করেছেন ন্যান্‌সি। রেকর্ডিংয়ের কথা রয়েছে আরও কয়েকটির। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হবে গানগুলো। সম্প্রতি আয়নাসংগীত নামে নতুন এক ধরনের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্‌সি। রাজুব ভৌমিকের কবিতা ‘প্রিয়তম’ থেকে এ গানের সুর করেছেন রাজন সাহা। এ গান প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘আয়নাসংগীত হচ্ছে গানের শব্দ রিপিট হবে। গানটি যখন আমি পাই, তখন ওলট-পালট লাগছিল। গীতিকার আমাকে বললেন গানটি লিখতে। আমি লিখতে গিয়ে বুঝতে পারি। এখানে গানের মুখটায় যে দুই লাইন, ওই কথাগুলোই অন্তরায় উল্টো বলতে হচ্ছে। গানটি গেয়ে বেশ ভালো লেগেছে।’

Tag :
জনপ্রিয়

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

প্রিন্স মাহমুদের কবিতায় কষ্ট পেয়েছেন ন্যান্‌সি

প্রকাশিত : ১২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুন ২০২০

গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদের ‘আমি বাঁচলেই হবে’ কবিতাটি দুঃখ দিয়েছে গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্‌সিকে। সম্প্রতি একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে সেটি। সম্প্রতি তাঁর নতুন গান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উঠে আসে করোনাকালে শিল্পীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গ। সে সময় ওই কবিতা প্রসঙ্গেও কথা বলেন এই কণ্ঠশিল্পী।

ন্যান্‌সি বলেন, ‘কিছুদিন আগে প্রিন্স ভাইয়ের “আমি বাঁচলেই হবে” কবিতাটি দেখলাম। তিনি লিখেছেন, একজন শিল্পীর কাজ কি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া, কয়টা লাইক এল সেসব দেখা, লিপস্টিক মাখা, ভিউ গোনা, কানে তুলা দিয়ে নিজে ভালো থাকা …ইত্যাদি ইত্যাদি। এ ধরনের একটি কবিতা দেখে খুবই দুঃখ পেয়েছি। প্রিন্স ভাই নিজে শিল্পী হয়ে অন্য শিল্পীদের দুঃখ যদি না বোঝেন, তাহলে কে বুঝবে? তাঁর এই কবিতায় কষ্ট পেয়েছি।’

কয়েক বছর ধরে সংগীত অঙ্গনের অনেকের আগের মতো কাজ নেই। এ কারণে সংগীতের অনেকেই জড়াচ্ছেন নাটক, বিজ্ঞাপন, সিনেমার গান ও সংগীত পরিচালনায়। কেউ কেউ জীবন ধারণ করতে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে গান ছাড়ছেন, অনেকে অনলাইনে অনুষ্ঠান করছেন। এসবের মধ্যে দিয়ে একজন শিল্পী যদি টিকে থাকার চেষ্টা করেন, তবে ক্ষতি নেই বলে মনে করেন ন্যান্‌সি।

এই সময়ে অনেকেই শিল্পীদের ছোট করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ন্যান্‌সি বলেন, ‘অনেককেই লিখতে দেখছি যে শিল্পীরা দুই–তিন মাস চলতে পারেন না। এটা দুঃখজনক। দেশের কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ীরা দুই–তিন মাস চলতে পারছেন না, তাহলে শিল্পীরা কীভাবে চলবেন? শিল্পীদের কাছে কি গুপ্তধন আছে? প্রকাশ করতে না পারলেও শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই সমস্যায় আছেন।’আক্ষেপ নিয়ে ন্যান্‌সি বলেন, ‘তিনি শিল্পী হয়ে শিল্পীদের ছোট করতে পারেন না, কটাক্ষ করতে পারেন না। এখন কাজ কমে গেছে, প্রাপ্য সম্মানিটুকুও অনেকে পান না। যে কারণে কিছু শিল্পী ইউটিউব চ্যানেলে গান তুলছেন। সে কি চাইবে না সেগুলোর ভিউ হোক, তা থেকে কিছু আয় হোক, সেটা দিয়ে সংসার চলুক, তিনি তো সবই বোঝেন! যদি প্রশ্ন করি, তিনি নিজে কী করেছেন? আমি ন্যান্‌সি সাধ্যমতো অনেক কিছু করেছি। কিন্তু যে শিল্পীরা স্টেজ শো, টিভি লাইভ ও রেকর্ডিংয়ের টাকায় সংসার চালাতেন, তাঁদের অনেকের আয় নেই। তাঁরা নিজের জায়গা থেকে সংগ্রাম করছেন। কার ব্যাংকে কত টাকা আছে, সেটা তাঁরাই জানেন। আর বসে খেলে রাজার সম্পদও ফুরিয়ে যায়। তারপরও কি অনেক শিল্পী তাঁর জায়গা থেকে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করছেন না? অবশ্যই করছেন। তাহলে এভাবে কেন আমরা শিল্পীরাই নিজেদের ছোট করব?’

সম্প্রতি সত্তর দশকের বাংলা ছবির জনপ্রিয় ‘গান হয়ে এলে’ গানটি নতুন করে ধারণ করা হয়েছে। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্‌সি। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে গানটি গেয়েছিলেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসি রহমান। সেটি ব্যবহার করা হয় রাজ্জাক-কবরী অভিনীত ‘নীল আকাশের নিচে’ ছবিতে। গানের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন কবরী।

এ গান প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘এত বড় একজন শিল্পীর গান গাইছি বলে প্রথম থেকেই অনেক ভয়ে ছিলাম। নিজের মৌলিক গান করার সময় অতটা চাপ বোধ করি না। তখন নিজের মতো করে যেভাবে খুশি গাওয়া যায়। কিন্তু ফেরদৌসি আপার মতো গুণী মানুষের গান গাওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের।’রিমেক এ গানের মূল সুর ঠিক থাকলেও ভিন্নতা থাকবে সংগীতায়োজনে। এ প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘আমাকে আগেই বলে নেওয়া হয়েছিল, মূল গানের গায়কী যেন বিকৃত না হয়। সেদিকেই আমার মনোযোগ ছিল বেশি। এখন আপার মতো একই কোয়ালিটি হয়তো হবে না, কিন্তু ওয়ে অব সিংগিং হয়তো আপার মতো একই হতে পারে। সে জন্য চেষ্টা করেছি মূল গানের আবেগটা ঠিক রাখতে।’

ঈদুল আজহাকে উপলক্ষ করে ইতিমধ্যে চারটি গানের রেকর্ডিং সম্পন্ন করেছেন ন্যান্‌সি। রেকর্ডিংয়ের কথা রয়েছে আরও কয়েকটির। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হবে গানগুলো। সম্প্রতি আয়নাসংগীত নামে নতুন এক ধরনের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্‌সি। রাজুব ভৌমিকের কবিতা ‘প্রিয়তম’ থেকে এ গানের সুর করেছেন রাজন সাহা। এ গান প্রসঙ্গে ন্যান্‌সি বলেন, ‘আয়নাসংগীত হচ্ছে গানের শব্দ রিপিট হবে। গানটি যখন আমি পাই, তখন ওলট-পালট লাগছিল। গীতিকার আমাকে বললেন গানটি লিখতে। আমি লিখতে গিয়ে বুঝতে পারি। এখানে গানের মুখটায় যে দুই লাইন, ওই কথাগুলোই অন্তরায় উল্টো বলতে হচ্ছে। গানটি গেয়ে বেশ ভালো লেগেছে।’