তামিম ইকবাল শুধু বড় একজন ক্রিকেটারই নন, তিনি অনেক বড় মনের মানুষও। কাছের পরিচিতজনরা সেটা আগে থেকেই জানেন। তবে করোনার এই সময়টায় তামিমের মহানুভবতার দৃষ্টান্ত দেখছেন ভক্ত-সমর্থকরাও।
যেখানেই অসহায়দের আর্থিক সাহায্যের দরকার, তামিম এগিয়ে যাচ্ছেন। সাধ্যমতো সাহায্য করছেন। সেটা মুশফিকুর রহীমের ব্যাট বিক্রি, নাজমুল হক অপুর ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা কিংবা নিজ উদ্যোগে গোপন দান; সবকিছুতেই তামিমের নামটি আসছে ঘুরে ফিরে।
এবার বড় মনের তামিমকে পাওয়া গেল প্রয়াত ক্রিকেটার কাজলের পরিবারের পাশেও। গত বুধবার হঠাৎ বুক ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন খুলনা জেলা ক্রিকেট অধিনায়ক রিয়াজুল ইসলাম কাজল। ৩২ বছর বয়সেই চলে যান না ফেরার দেশে।
কাজলের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে হতবিহ্বল তার পরিবার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনিই। তার নিজের একটি চার বছরের ছোট্ট কন্যা সন্তান রয়েছে। অকালে স্বামী হারিয়ে পাগলপ্রায় কাজলের স্ত্রী।
বাগেরহাট থেকে শুরু করে ঢাকা লিগে এই ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলেছেন জাতীয় দলের তারকা পেসার রুবেল হোসেন। তিনি কাজলের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন। যেটি নজরে আসার পর তামিম ফোন দেন রুবেলকে, জানান সবাই মিলে যতটুকু সম্ভব সাহায্য করতে চান।
তামিমের এমন মহানুভবতায় মুগ্ধ রুবেল আরেকটি ফেসবুক পোস্টে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশসেরা ওপেনারকে। এছাড়া যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য রুবেলের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল, ক্রিকেটার কাজলের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন মহৎ কাজে আমাদের সবাইকে উদ্ধুদ্ধ করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
তার উদ্যোগেই মূলত আমাদের করোনাভাইরাসের মাঝে অসহায় দুস্থ গরীব মানুষদের জন্য গঠিত তহবিল থেকে কাজলের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
আপনারা জানেন, শ্বাসকষ্টের কারণে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন খুলনার সুপরিচিত ক্রিকেটার কাজল। তার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। দীর্ঘদিন আমরা একসঙ্গে বাগেরহাট থেকে শুরু করে ঢাকা লিগে খেলেছি। কাজলের মৃত্যু নিয়ে আমার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। তা দেখেই তামিম ভাই আমাকে ফোন দিয়েছিলেন।
কাজলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্বও বটে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না, কাজলের পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বলতে একমাত্র সে-ই ছিল। তার বাবা নেই। চার বছরের ছোট্ট একটি কন্যা শিশু রয়েছে। বুঝতেই পারছেন, অকালে স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা কাজলের স্ত্রী!
তামিম ভাই ফোন দিয়ে আমার কাছে কাজলের পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরই প্রেক্ষিতে আজ কাজলের স্ত্রীর কাছে আমি আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। মানসিকভাবে অনেক শান্তি লাগছে।
আমার পোস্ট দেখে যেমন একজন তামিম ইকবাল এগিয়ে এসেছেন। ঠিক তেমনি আমার বিশ্বাস পুনরায় আমার এই পোস্ট দেখে, সাবেক ক্রিকেটার, সংগঠক কিংবা ক্লাবের মালিকরাও কাজলের পরিবারের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন।
আবারও তামিম ভাইয়ের পাশাপাশি এই ফান্ডে আমার জাতীয় দলের সতীর্থ যে সব ক্রিকেটারের আর্থিক অনুদান রয়েছে, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন মরহুম কাজলকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। #আমিন।’