চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় আইন অমান্য করে বেশ কয়েকটি খাল, বিল ও নদীতে বাঁশের স্থাপনা গেড়ে ভেসাল (ভেল) জাল দিয়ে ব্যাপক হারে দেশি জাতের মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট জেলেদের নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও ওই স্থাপনা-জাল সরাননি। গতকাল বৃহস্পতিবার নোটিশে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়।
জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আকতার জানান, ১৯৫০ সালের মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, নদী, খাল বা প্রবহমান স্রোতোধারায় বেড়া, বাঁধ বা অন্য কোনো স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা দিয়ে সেখানে জাল পেতে মাছ শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, প্রশাসনের চোখ এড়াতে মাঝেমধ্যে জাল পেতে জেলেরা নিরাপদ স্থানে চলে যান। পরে সুযোগমতো জাল টেনে মাছ ধরেন। প্রতিদিন প্রতিটি জালে ১৪ থেকে ১৫ কেজি করে মাছ শিকার হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নলুয়া ও বরদিয়া এলাকার দুজন জেলে বলেন, ‘ভেসাল জাল পাইতা ভালো মাছ ধরতাছি। দিনে তিন-চারবার কইরা জাল টান দেই। প্রতিবার প্রতি জালে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি কইরা মাছ পাই। এ ব্যাপারে একটা নোটিশ পাইলেও জাল সরাই নাই। টেয়াপয়সা খরচ কইরা বেড়া ও জাল বানাইছি। মাছ না ধরলে খরচের টেয়া উঠামু কেমনে।’
উপজেলার বরদিয়া এলাকার শিক্ষক মো. কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর এলাকার খাল-বিলগুলোয় ভেসাল জাল পেতে জেলেরা নির্বিচারে দেশি জাতের মাছ শিকার করছেন। মাছ ছাড়াও জালে ব্যাঙ, কুচিয়া, সাপ, কচ্ছপসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী ধরা পড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। হুমকিতে রয়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। জাল ও স্থাপনায় কচুরিপানা আটকে খাল-নদীতে পানির প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। পানিও দূষিত হচ্ছে। স্থানীয় মৎস্য বিভাগকে একাধিকবার বলা হলেও এসব স্থাপনা-জাল সরানো হচ্ছে না।