রানওয়ের উপরে চলে এলেও মাটি ছোঁয়নি কোঝিকোড়ে ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমান আইএক্স ১৩৪৪। কোঝিকোড় বিমানবন্দরের একটি সূত্র থেকে শনিবার এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে।
বিমানবন্দরের অফিসারদের দাবি, গত সন্ধ্যায় ঝমঝমে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিমানটি রানওয়েতে নেমে এলেও, পেট থেকে চাকা খুললেও সেই চাকা রানওয়ে ছোঁয়নি। বিমানটি রানওয়ের কয়েক ফুট উপর দিয়ে রানওয়ে ধরে উড়ে যায় কিছুটা। এই ঘটনায় তাঁরা বেশ অবাকই হয়েছিলেন।
দুর্যোগের সময়ে বিমানবন্দরে প্রস্তুতই ছিল দমকল বাহিনী। টাওয়ার থেকে নির্দেশ পেয়ে সেই দমকল বাহিনী তখন ‘ফলো’ করে বিমানকে। কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকারে ওই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় একটু পরে বিমানটি নজরের বাইরে চলে যায়। বড় বিপদের আশঙ্কা থাকলে সাধারণত ‘মে ডে কল’ করে সঙ্কেত দেন পাইলট। কিন্তু কোঝিকোড় বিমানবন্দর সূত্রের খবর, আইএক্স ১৩৪৪ থেকে কোনও ‘মে ডে’ কল পাওয়া যায়নি।
যা বলছে সরকার • বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর দাবি, প্রয়োজনে অন্য বিমানবন্দরে যাওয়ার মতো জ্বালানি ছিল আইএক্স-১৩৪৪-এর। • কোঝিকোড়ের রানওয়েতে আগে অন্তত ২৭ বার উড়ান নিয়ে নেমেছিলেন পাইলট দীপক বসন্ত শাঠে। • ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বিমানের ব্ল্যাক বক্স। যা থেকে পাওয়া তথ্য সাহায্য করবে তদন্তকারীদের। • আপাতত মৃত যাত্রীদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্র। পরে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। • মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেবে কেরলও। |
খবর আসে, বিমানবন্দরের রানওয়ে ছেড়ে কিছুটা দূরে ভেঙে দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে বিমানটি। সেখানে যায় দমকল বাহিনী। শনিবার কোঝিকোড় থেকে বিমানবন্দরের এক কর্তার দাবি, “রানওয়ের উপরে এসেও কেন মাটি ছুঁলেন না পাইলট তা বোঝা যাচ্ছে না। তদন্তে নিশ্চয় কোনও কারণ জানা যাবে। আমাদের ধারণা, শেষ মুহূর্তে রানওয়ের শেষ প্রান্তে গিয়ে হয়তো বিমানের চাকা মাটি ছুঁয়েছিল। কিন্তু সেটা টাওয়ারে বসে ঠাহর করা সম্ভব হয়নি।”
কোঝিকোড় বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিটে প্রথম রানওয়ের পূর্ব দিক থেকে নামার চেষ্টা করেছিলেন পাইলট দীপক বসন্ত শাঠে। কিন্তু সমুদ্রের পাশে পাহাড়ি এলাকায় প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে তখন বিপরীতমুখী হাওয়া বইছিল। অভিজ্ঞ পাইলটেরা জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী সব সময়ে হাওয়ার বিপরীতে নামতে হয়। যাতে উল্টো দিক থেকে হাওয়া এসে বিমানের গতি কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু কোঝিকোড়, মেঙ্গালুরু, দেহরাদূূন, মিজোরামের লেংপুই— এই ধরনের পাহাড়ের মাথা কেটে তৈরি টেবলটপ রানওয়েতে বৃষ্টির সময়ে হাওয়ার গতিবিধি প্রত্যেক মুহূর্তে বদলে যেতে থাকে। ফলে খুব সন্তর্পণে নামতে হয়। রানওয়ের পরেই এই সব বিমানবন্দরে গিরিখাত আছে। তাই, কোনও কারণে রানওয়ে ছেড়ে বেরিয়ে গেলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
কোঝিকোড় বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পূর্ব দিকের রানওয়েতে নামতে না পেরে আবার মুখ ঘুরিয়ে আকাশে উড়ে যান পাইলট। উঠে যান প্রায় ৮ হাজার ফুট উচ্চতায়। বেশ খানিকটা সময় নেন। একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই সময়ে তিনি বেশ কিছু জ্বালানি ফেলে দেন। তাতে বিমানের ওজন কমে যায়। এই ধরনের আবহাওয়ায় বিমানের ওজন কমে গেলে নামতে সুবিধা হওয়ার কথা।
কোঝিকোড় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) সূত্রের খবর, দ্বিতীয় বার বিমানবন্দরের মাথায় ফিরে এসে পাইলট নিজে থেকেই জানান, তিনি পশ্চিম দিক থেকে নামতে চান। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) থেকে তখন তাঁকে হাওয়ার গতিবেগ, দৃশ্যমানতা জানানো হয়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সেই সময়ে ঘণ্টায় প্রায় ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছিল। যেটা ওই আবহাওয়ায় স্বাভাবিক। পশ্চিম দিক থেকে রানওয়ের কাছে এসে পাইলট জানতে চান, তিনি