লাগাম নেই সংক্রমণে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফের ৬০ হাজারেরও বেশি করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলল আমেরিকায়। এই নিয়ে টানা পাঁচ দিন! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে এই মুহূর্তে মোট সংক্রমিত ৪৮ লক্ষ ছুঁইছুঁই। মৃত্যুমিছিলও চলছে। গত কাল ফের সে দেশে হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ফ্লরিডা ও ক্যালিফর্নিয়ায়। আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের আশঙ্কা, আগামী তিন সপ্তাহে মৃত্যু হতে পারে আরও ২০ হাজারের।
বিশেষত লন্ডনের পরিস্থিতি মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে সদ্য করোনা-মুক্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনেরও। রিপোর্ট বলছে, ২১ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে লন্ডনের বেশ কিছু এলাকায় সংক্রমণ বেশ বেড়েছে। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট সূত্রের খবর, গ্রেটার লন্ডনে ফের সংক্রমণ ঝড় উঠলে গোটা শহরেই নতুন করে লকডাউন জারি করার কথা ভাবছেন জনসন। অকারণে বাড়ির বাইরে বেরোনোর ব্যাপারেও নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবা হচ্ছে লন্ডনে।
বিশ্বে করোনা
মৃত |
আক্রান্ত ১,৮১,৬৫,৯৭৩ সুস্থ |
সংক্রমণের নিরিখে তালিকার প্রথম পাঁচে থাকা শুধু আমেরিকা, ব্রাজিল, ভারত, রাশিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, করোনা-আতঙ্কে ভুগছে প্রায় সব দেশই। এরই মধ্যে গত কাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ফের জানিয়েছে— পরিস্থিতি এখনই স্বাভাবিক হওয়ার নয়। সংক্রমণ, মৃত্যু এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির বিচারে আরও কয়েক দশক ভোগাতে চলেছে কোভিড-১৯। করোনা নিয়ে বিশ্বকে প্রথম বার সতর্ক করার প্রায় ছ’মাস পরে গত কাল বিশেষ বৈঠকে বসেছিল হু-র এমার্জেন্সি কমিটি। এ নিয়ে চার বার এমন বৈঠকে বসলে কমিটির ১৮ সদস্য এবং ১২ জন উপদেষ্টা। সেখান থেকেই সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বললেন, ‘‘এমন অতিমারি ১০০ বছরে এক বার আসে। অনেক দেশই মনে করছে, তারা সংক্রমণ মুক্ত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়ে দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। তাই নিশ্চিন্ত থাকার উপায় নেই।’’ এই পরিস্থিতিতে প্রতিষেধকই যে একমাত্র স্বস্তি দিতে পারে, ফের তা জানালেন হু-কর্তা।
করোনা-ভ্যাকসিন দৌড়ের প্রায় শেষ ধাপে এখন রাশিয়া, ব্রিটেন ও আমেরিকার তিন-তিনটে ‘ক্যান্ডিডেট’। অনেকেরই দাবি, এ বছরের মধ্যেই ‘সুলভ’ হবে করোনা-টিকা। প্রতিষেধক বাজারে এলে, কারা প্রথমে পাবেন, তা নিয়েও আলোচনা-তর্ক চলছে। অনেকেই বলছেন, প্রথমে পাওয়া উচিত ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও বৃদ্ধদের। মডার্নার ভ্যাকসিন আশার আলো দেখানোয়, এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা তৈরিতে উঠে পড়ে লেগেছে আমেরিকার স্বাস্থ্য বিভাগ। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের প্রধান ফ্রান্সিস কলিন্স বললেন, ‘‘প্রথম ধাপে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যাপারে এলাকা ধরেও এগোনো যেতে পারে। সংক্রমণ বেশি হলে, সেই এলাকার মানুষেরাও আগে প্রতিষেধক পেতে পারেন।’’