বলিউড তারকা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত রাজনীতির অঙ্গনে বড়সড় বিতর্ককে সামনে নিয়ে এল। সুশান্তের মৃত্যু ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ইডির তদন্তে নাম উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিক-এর প্রযোজক সন্দীপ সিংহের।
সূত্রের দাবি, অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে মুম্বইয়ের মাদক চক্রের সঙ্গে সন্দীপের যোগের কথা সামনে আসে। ইডির তরফে সিবিআইকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ জানিয়েছেন, বলিউড ও মাদকচক্রের সঙ্গে সন্দীপের যোগ নিয়ে তিনি বহু অভিযোগ পেয়েছেন। মোদীর বায়োপিক, ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’-র প্রযোজক সম্পর্কে এই সব অভিযোগের তদন্ত করার জন্য সিবিআইকে চিঠি লিখতে চলেছেন তিনি। মুম্বইয়ে দেশমুখ সরব হতেই দিল্লিতে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও আজ সন্দীপ ও বিজেপির যোগ নিয়ে অনেকগুলি প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু সন্দীপই নন, মোদীকে ঘিরে প্রচারের আলোয় এসেছেন, এমন বেশ কয়েক জন ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলিও সামনে নিয়ে এসেছেন।
সন্দীপ-বিতর্কে সিঙ্ঘভি আজ দশটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সন্দীপ নিজেকে সুশান্তের বন্ধু বলে দাবি করেন। আর সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহে বিজেপির মহারাষ্ট্রের দফতরে ৫৩ বার ফোন করেছেন সন্দীপ। তাঁর রক্ষাকর্তা কেউ রয়েছে কি না, তা সামনে আসা উচিত। সিঙঘভির কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের মধ্যেই মোদীকে নিয়ে সিনেমাটি মুক্তি পেতে চলেছিল। মামলা করে সেই সময়ে ছবির মুক্তি আমিই আটকেছিলাম, কিন্তু মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের উপস্থিতিতে ছবির পোস্টার দেশের সামনে এসেছিল।’’ কংগ্রেস নেতার দাবি, সন্দীপ সিংহই একমাত্র প্রযোজক, যিনি গত বছর ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এর প্রচারে ১৭৭ কোটি টাকার মউ সই করেছেন। অথচ সরকারকে তিনি জানান, ২০১৭ সালে তাঁর সংস্থা ৬৬ লক্ষ টাকা লোকসান করেছে। ২০১৮ সালে ৬১ লক্ষ টাকা লাভ, ২০১৯ সালে ৪ লক্ষ টাকা লোকসানে চলেছে সন্দীপের সংস্থা। অথচ সেই লোকসানে থাকা সংস্থাই গত বছর ১৭৭ কোটি টাকার মউ সই করেছে গুজরাত সরকারের সঙ্গে। কংগ্রেস নেতা বলেন, সংবাদমাধ্যমের খবর, সন্দীপ নাকি ভারত ছেড়ে চলে যেতে পারেন। ফলে তাঁর গড ফাদার কে বা কারা, তা এখনই নিতিন গডকড়ী, ফডণবীসের মতো নেতাদের দেশের সামনে স্পষ্ট করা উচিত।
শুধু সন্দীপই নন, কংগ্রেস নেতার দাবি, মোদীর স্যুট কিনে প্রচারের আলোয় আসা লালজিভাই পটেল ও তাঁর পরিবার গুজরাতে কোভিডের আগেই বড় মাপের ভেন্টিলেটর কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। আর ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ বইটি নিয়ে সিনেমা করেছেন যিনি, তাঁর বাবার নাম ৩০০ কোটি টাকার কৃষি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গিয়েছে।