ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং এলাকা দিয়ে আজ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মিয়ানমারের সেনা সাদ সাহেব রুজু করার পর দেওবন্দের মাসআলা খতম হয়ে গেছে : মাওলানা আরশাদ মাদানী চলছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের বয়ান পুলিশ সদস্যসহ বিশ্ব ইজতেমায় ৭ জনের মৃত্যু বর্তমান সরকারের সঙ্গে সব দেশ কাজ করতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

কর্মকর্তারা পাহারা দিলেন ভারতীয় ট্রানজিট পণ্য

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
  • ৭৮৫ পঠিত

চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চালান আখাউড়ায় নেওয়া হয়েছে। কনটেইনার পণ্যের নিরাপত্তায় ‘ইলেকট্রিক সিল’ ব্যবহৃত না হওয়ায় পাহারা দিয়েই নেওয়া হয় চালানটি। তাতে এ–সংক্রান্ত মাশুলও আদায় করা যায়নি।

ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের পরিচালনা পদ্ধতির প্রক্রিয়ায় (এসওপি) ইলেকট্রিক সিল ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিধিমালায় ৪৮ ঘণ্টা সিল ব্যবহারের জন্য কনটেইনারপ্রতি ৬০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ টাকা করে আদায় করার কথা বলা হয়। সিল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই এ মাশুল আদায় করার কথা। অবশ্য ১৩ জুলাই এনবিআর এক নির্দেশনায় বলেছে, ইলেকট্রনিক লক ও সিল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না করা পর্যন্ত এই ফি আদায়যোগ্য হবে না। বিধিমালা কার্যকর না থাকায় আপাতত সাধারণ সিল ব্যবহার হয়েছে। সঙ্গে ছিল পাহারাও।

ট্রানজিট পণ্য চালানের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পাদনে প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম। তিনি মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ইলেকট্রনিক সিল–সংক্রান্ত একটি বিধিমালা আছে। তবে বিধিমালার আওতায় এখন কেউ কাজ করছে না। এ কারণে পরীক্ষামূলক ট্রানজিট পণ্য সড়কপথে নেওয়ার সময় ‘এসকর্ট’ দেওয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে বিধিমালা কার্যকর হলে ইলেকট্রনিক সিল ব্যবহৃত হবে। তখন হয়তো এসকর্টের দরকার হবে না।

এনবিআর জানায়, ইলেকট্রনিক সিল হচ্ছে অবৈধভাবে ঘষামাজা বা পরিবর্তন প্রতিরোধসক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তির রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন ডিভাইসেস (আরএফআইডি)। এটি চাবি দিয়ে খুলতে ও বন্ধ করতে হবে। এই সিল থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পণ্য চালানটি কোথায় আছে, তা সহজেই শনাক্ত করা যায়। বন্দর থেকে ডিপোতে আমদানি–রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তার জন্য ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনবার ইলেকট্রনিক সিলের বিধিমালা জারি করে রাজস্ব বোর্ড। তবে প্রতিবারই ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

অবশ্য গত বছরের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার–সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতির প্রক্রিয়ায় (এসওপি) এই সিল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এতে ট্রানজিট পণ্যে পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিল সংযুক্ত করার কথাও বলা হয়। পরে ২৭ অক্টোবর আগের বিধিমালা সংশোধন করে আমদানি–রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট পণ্য পরিবহনে তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়।

ট্রানজিট পণ্য যাবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে। জানতে চাইলে ত্রিপুরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এম এল দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষামূলক চালানে পাহারা দিয়ে পণ্য পরিবহনের সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। তবে নিয়মিত পণ্য পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিলের বিকল্প নেই। কারণ, বিশ্বজুড়ে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিল ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে পণ্যের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি পাহারার দরকার হবে না।

চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতের ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চার কনটেইনারের চালানের রড ও মসুর ডাল বোঝাই চারটি প্রাইমমুভার ট্রেইলার গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যগুলো ভারতের আগরতলায় পাঠানো হবে।

ট্রানজিট পণ্য গতকালই ভারতে পাঠানোর কথা ছিল। তবে আখাউড়া ও আগরতলা স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ভারতীয় এসব পণ্য গ্রহণ করবেন বলে অনুষ্ঠানটি একদিন পেছানো হয়েছে। এমনটাই জানান ভারতীয় পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন।

আখাউড়া স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’

Tag :
জনপ্রিয়

রমজানে মাধ্যমিক স্কুল খোলা থাকবে ১৫ দিন, প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন

কর্মকর্তারা পাহারা দিলেন ভারতীয় ট্রানজিট পণ্য

প্রকাশিত : ০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চালান আখাউড়ায় নেওয়া হয়েছে। কনটেইনার পণ্যের নিরাপত্তায় ‘ইলেকট্রিক সিল’ ব্যবহৃত না হওয়ায় পাহারা দিয়েই নেওয়া হয় চালানটি। তাতে এ–সংক্রান্ত মাশুলও আদায় করা যায়নি।

ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের পরিচালনা পদ্ধতির প্রক্রিয়ায় (এসওপি) ইলেকট্রিক সিল ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিধিমালায় ৪৮ ঘণ্টা সিল ব্যবহারের জন্য কনটেইনারপ্রতি ৬০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ টাকা করে আদায় করার কথা বলা হয়। সিল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই এ মাশুল আদায় করার কথা। অবশ্য ১৩ জুলাই এনবিআর এক নির্দেশনায় বলেছে, ইলেকট্রনিক লক ও সিল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না করা পর্যন্ত এই ফি আদায়যোগ্য হবে না। বিধিমালা কার্যকর না থাকায় আপাতত সাধারণ সিল ব্যবহার হয়েছে। সঙ্গে ছিল পাহারাও।

ট্রানজিট পণ্য চালানের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পাদনে প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম। তিনি মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ইলেকট্রনিক সিল–সংক্রান্ত একটি বিধিমালা আছে। তবে বিধিমালার আওতায় এখন কেউ কাজ করছে না। এ কারণে পরীক্ষামূলক ট্রানজিট পণ্য সড়কপথে নেওয়ার সময় ‘এসকর্ট’ দেওয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে বিধিমালা কার্যকর হলে ইলেকট্রনিক সিল ব্যবহৃত হবে। তখন হয়তো এসকর্টের দরকার হবে না।

এনবিআর জানায়, ইলেকট্রনিক সিল হচ্ছে অবৈধভাবে ঘষামাজা বা পরিবর্তন প্রতিরোধসক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তির রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন ডিভাইসেস (আরএফআইডি)। এটি চাবি দিয়ে খুলতে ও বন্ধ করতে হবে। এই সিল থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পণ্য চালানটি কোথায় আছে, তা সহজেই শনাক্ত করা যায়। বন্দর থেকে ডিপোতে আমদানি–রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তার জন্য ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনবার ইলেকট্রনিক সিলের বিধিমালা জারি করে রাজস্ব বোর্ড। তবে প্রতিবারই ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

অবশ্য গত বছরের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার–সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতির প্রক্রিয়ায় (এসওপি) এই সিল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এতে ট্রানজিট পণ্যে পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিল সংযুক্ত করার কথাও বলা হয়। পরে ২৭ অক্টোবর আগের বিধিমালা সংশোধন করে আমদানি–রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট পণ্য পরিবহনে তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়।

ট্রানজিট পণ্য যাবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে। জানতে চাইলে ত্রিপুরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এম এল দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষামূলক চালানে পাহারা দিয়ে পণ্য পরিবহনের সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। তবে নিয়মিত পণ্য পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিলের বিকল্প নেই। কারণ, বিশ্বজুড়ে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিল ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে পণ্যের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি পাহারার দরকার হবে না।

চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতের ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চার কনটেইনারের চালানের রড ও মসুর ডাল বোঝাই চারটি প্রাইমমুভার ট্রেইলার গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যগুলো ভারতের আগরতলায় পাঠানো হবে।

ট্রানজিট পণ্য গতকালই ভারতে পাঠানোর কথা ছিল। তবে আখাউড়া ও আগরতলা স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ভারতীয় এসব পণ্য গ্রহণ করবেন বলে অনুষ্ঠানটি একদিন পেছানো হয়েছে। এমনটাই জানান ভারতীয় পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন।

আখাউড়া স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’