করোনাভাইরাসে বেশি সংক্রমিত হওয়া তুলনামূলক বড় এলাকা নিয়ে কঠোরভাবেভাবে কার্যকর লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে পরামর্শক কমিটি। করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটির পক্ষ থেকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে কমিটি হাসপাতালের সেবার আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন চেয়েছে।
করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে ওই কমিটি মোট পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে। দুদিন আগে কমিটির এক সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও বুধবার পরামর্শগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা রাতে প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
অধ্যাপক সহিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকারের জায়গা হলো হাসপাতালের সেবা বাড়ানো। কারণ অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অনেক রোগী ভর্তি হতে পারছেন না। এর আশু সমাধান করতে হবে। রোগী ভর্তির জন্য হাসপাতালের শয্যা বাড়াতে এবং সেটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আর শুধু শয্যা বাড়ালেই হবে না। এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক উপকরণও বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়াতে হবে।
জানা গেছে, কমিটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অক্সিজেন যন্ত্র সংগ্রহ করতে বলেছে। কমিটি বলেছে, সংক্রমণ বিবেচনায় লাল, হলুদ ও সবুজ এলাকায় যে ভাগ করা হচ্ছে সেখানে কার্যকর লকডাউন করতে হবে। আর সেটি ছোট ছোট এলাকা নয়, এলাকাগুলো গুলো বড় হলে ফল ভালো পাওয়া যাবে বলে কমিটি মনে করে।
উল্লেখ, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১ জুন সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায় সংক্রমণ বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে লাল, হলুদ ও সবুজ এলাকায় ভাগ করে ভিন্নমাত্রায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্ব–রাজা বাজার এলাকায় গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার আরও কিছু এলাকায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন করার প্রস্তুতি চলছে।
পরামর্শক কমিটি বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের চিকিৎসার জন্য সুর্নিদিষ্ট হাসপাতাল নির্ধারণ করার পর্রামশ দিয়েছে। এ ছাড়া কমিটি বলেছে, কোভিড-১৯ শনাক্তের জন্য কেবল পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ালেই হবে না। এর গুণগত মান বাড়াতে হবে এবং রোগীরা যেন দ্রুত পরীক্ষার ফল জানতে পারে সে বিষয়েও জোর সুপারিশ করেছে কমিটি।
করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত ১৮ এপ্রিল ১৭ সদস্যের এই কারিগরি পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটির কাজ হলো করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া।