লিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর প্রথম দিকেই আওয়াজ তুলেছিলেন কঙ্গনা রনৌত। তিনিই প্রথম সুশান্তের মৃত্যুর জন্য বলিউডের ‘নেপোটিজম’ ইস্যুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান। এরপর বিটাউন সাম্রাজ্যের বুকে ‘স্বজনপোষণ’ ঝড়ের তাণ্ডব ক্রমে বেড়েই চলেছে। কঙ্গনাও বলিউডের বাইরে থেকে এসে প্রথম সারির নায়িকার তালিকায় নিজের জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর সংগ্রামময় জীবনের কিছু কথা তুলে ধরেন।
বলিউডে কঙ্গনার কোনো ‘গডফাদার’ ছিল না। আজ এই উচ্চতায় পৌঁছানোর পেছনে রয়েছে তাঁর অদম্য জেদ আর হাড়ভাঙা পরিশ্রম। নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদেই একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি চড়েছেন কঙ্গনা। এই বলিউড অভিনেত্রী জানান, তাঁর এক সাবেক প্রেমিক তাঁকে রীতিমতো অপদস্থ করেছিলেন। কেবল অর্থের লোভে কঙ্গনা সম্পর্ক গড়ে তোলেন, এমন অপবাদও দিয়েছিলেন সেই প্রেমিক। আর তারপর থেকে নিজেকে প্রমাণ করার জেদ পেয়ে বসে কঙ্গনাকে। আর তখনই কঙ্গনা স্থির করেন, ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তিনি দেশের সবচেয়ে ধনী লোকদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নেবেন।
এই বলিউড তারকার স্বপ্ন, ৫০ বছর বয়সের আগেই তিনি ভারতের সেরা বাড়িগুলোর একটায় থাকবেন। তাঁর অফিস হবে দেশসেরা অফিসগুলোর একটি। দেশের প্রথম সারির ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁর নাম জ্বলজ্বল করবে। তিনি তাঁর সাবেক প্রেমিককে ভুল প্রমাণ করতে মরিয়া। বলিউডে সংগ্রামের দিনগুলো নিয়ে কথা বলেছেন কঙ্গনা। তিনি জানান, ‘গ্যাংস্টার’ ছবির পর অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতো পোশাক তাঁর কাছে ছিল না। এমনকি পোশাক কেনার টাকাও ছিল না তাঁর। তবে ওই সময় কঙ্গনার ফ্যাশন ডিজাইনার বন্ধু রিকি রায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি কঙ্গনাকে পোশাক স্পনসর করতেন। রিকি না থাকলে পুরস্কার নিতে যাওয়াই হতো না কঙ্গনার। কঙ্গনা ক্যারিয়ারের শুরুর দিনে ‘ম্যাংগো’ ব্র্যান্ডের পোশাক কিনতেন। আর এটাই নাকি তাঁর কাছে চরম বিলাসিতা ছিল।
২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে আসেন কঙ্গনা রনৌত। বক্স অফিসে ছবিটি বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। কিন্তু এত দূর আসতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে কঙ্গনাকে। কঙ্গনা পথের সব বাধাকে ঘৃণা করেন বটে, কিন্তু নিজের গল্পগুলোকে বড় বেশি ভালোবাসেন। এর আগে অন্য এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা বলেছিলেন, ‘যেন হাজার বছর পাড়ি দিয়েছি আমি। মুম্বাইয়ে ফার্স্ট ক্লাসে উড়ে আসতে পারিনি। বাস, ট্যাক্সি, ট্রেন, এমনকি হেঁটেও যাতায়াত করতে হয়েছে। বাড়ি ছিল না, ফুটপাতে শুয়েছি। অনেক ফাঁদে পড়ে মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হয়েছে। জীবনের অন্ধকার দিকটি যেমন দেখেছি, তেমনি দুবার প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে পুরস্কার জিতেছি। এখন বলিউডে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের একজন আমি।’